রাজধানীর সাভারের আশুলিয়ায় শতাধিক তৈরি পোশাক কারখানার অবস্থান। আশুলিয়াকে বাণিজ্যিক এলাকা হিসেবে প্রাধান্য দেয়া হয়। আশুলিয়া থানায় ঢাকা ইপিজেড এর দুটি ইউনিট অবস্থিত। লক্ষ্য লক্ষ্য পোশাক শ্রমিকের বসবাস এই এলাকাতে এবং দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে আশুলিয়া থানার এই গার্মেন্টস শিল্প।
গত ৫ আগস্ট স্বৈরশাসক হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ থেকে পলায়ন করার পরে থেকে একটি কুচক্রী মহলের সহায়তায় গার্মেন্টস শিল্পকে উত্তপ্ত করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন পোশাক শ্রমিকদের একটি বড় অংশ ও পোশাক তৈরি কারখানা মালিকরা।
স্বৈরশাসক ও গণহত্যাকারী হাসিনার সরকারের পদত্যাগের পর থেকেই একটি দখলদার ও কুচক্রী মহল তাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদতে গার্মেন্টস শিল্পের উপর বিভিন্ন সময় হামলা ও শ্রমিকদের উপর নির্যাতন করে যাচ্ছে ও কারখানায় ঢুকে চালানো হচ্ছে ভাঙচুর ও লুটপাট। গত কয়েকদিনে দুষ্কৃতিকারীদের হামলায় অনেক শ্রমিক আহত হয়ে হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।
পোশাক শ্রমিক ও মালিক পক্ষের সাথে কথা বলে জানা যায়, আওয়ামীলীগের নামে ত্রাস সৃষ্টিকারী ও দখলদার ছাত্রলীগ ও শ্রমিকলীগ আবারো গার্মেন্টস শ্রমিক হয়ে ফিরে এসেছে। সেই সাথে মরার উপর ঘাড়ার ঘা হয়ে এসেছে ১৭ বছর আওয়ামী লীগের ছত্রছায়ায় রাজনীতি ও দখল বাজি করে আসা কথিত বিএনপি সহ তাদের অঙ্গসংগঠনের নাম ব্যবহারকারী সুবিধাবাদী এই সমস্ত নব্য বিএনপি। তারা একেক সময় একেক রূপ ধারণ করে। বিগত সময় তারা আওয়ামী লীগের হাই প্রোফাইল লোকের সাথে চলাফেরা করে তাদের ইন্দ্রনে স্বৈরশাসক গণহত্যাকারী ফ্যাসিস্ট সরকার আওয়ামী লীগকে প্রতিষ্ঠিত করে রেখেছিল। এখন তারাই আবার বিএনপি'র ত্যাগী নেতা বলে নিজেদেরকে দাবি করছে। এই কুচক্রী মহল বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের দুঃশাসনের সময় যেমন এই সমস্ত তৈরি পোশাক কারখানা ও রাস্তায় ফুটপাত দখল করে তাদের স্বার্থ হাসিল করে অর্থ উপার্জন করেছে তারাই এখন রূপ বদলিয়ে বিএনপি এর নাম ব্যবহার করে গার্মেন্টস দখল রাস্তাঘাট দখলের পায় তারা চালাচ্ছে। যার ফলশ্রুতিতে এই সমস্ত দুষ্কৃতিকারী আওয়ামী লীগের সময়ের সুবিধা ভোগীরা বিভিন্নভাবে রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল করার পায়তারা চালাচ্ছে।
আজ সকালে আশুলিয়ায় অধিকাংশ পোশাক ফ্যাক্টরিতে যখন পোশাক শ্রমিকরা কাজে যোগদান করে তখনই একটি দুষ্কৃতিকারী দল বিভিন্ন পোশাক ফ্যাক্টরিতে লাঠি সোটা হাতে নিয়ে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে এবং পোষাক শ্রমিকদের ফ্যাক্টরির ভিতর থেকে বের হতে বাধ্য করে।
আশুলিয়ার জামগড়ায় অবস্থিত ইয়া গি বাংলাদেশ লিমিটেডে অন্যান্য ফ্যাক্টরির মতো সেখানেও সকাল থেকে পোশাক শ্রমিকরা প্রবেশ করে এবং কাজে যোগদান করে যার যার কাজ পরিচালনা করছিল। আনুমানিক সকাল ৯টায় বাহির থেকে কিছু লোকজন ফ্যাক্টরির গেটে প্রাথমিকভাবে হামলা করে। এসময় কমিউনিটি পুলিশ হামলাকারীদের বাধা প্রয়োগ করলে তাদের উপর হামলা চালায়। একপর্যায়ে ফ্যাক্টরি গেট ভেঙে হামলাকারীরা প্রবেশ করে ফ্যাক্টরি ভিতরে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় ও শ্রমিকদের উপর হামলা চালায়। হামলার শিকার হওয়া কিছুসংখক শ্রমিকে মুমূর্ষ অবস্থায় স্থানীয় নারী ও শিশু হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এরপরে দুষ্কৃতিকারীরা ইয়া গি বাংলাদেশ লিমিটেডের চাইল্ড হোম কক্ষতে হামলা চালায়। এতে করে চাইল্ড হোমের একাধিক শিশু আহত হয় বলে জানা যায়।
ইয়া গি বাংলাদেশ লিমিটেডের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বলেন, তাদের অফিসে ভাংচুর করে তাদের কম্পিউটারের হারড ড্রাইভ খুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
জাহাঙ্গীর আলম নামে এক কর্মকর্তা বলেন, সবুজ সরকার নামের একজন ৯ টা ৫০ মিনিটে ফোন করে বলে ফ্যাক্টরি রক্ষা করতে হলে বা চালাতে হলে যাদের ক্ষমতা রয়েছে তাদেরকে দিয়েই এই ফ্যাক্টরি চালানোর দায়িত্ব দিতে হবে তানাহলে এরকম বিশৃংখল পরিস্থিতি ঘটতেই থাকবে।
সবুজ সরকারের সাথে যোগাযোগ করা হলে সবুজ সরকার সকালের বাংলাদেশকে জানায়, আমাকে ইচ্ছাকৃতভাবে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। আমি ফ্যাক্টরিতে হামলা করাতে এখানে আসি নাই। আমি এসেছি হামলাকারীদের হাত থেকে ফ্যাক্টরিটি রক্ষা করতে।
পরে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে হামলাকারীরাদের ছত্র ভঙ্গ করা হয়।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মাজহারুল ইসলাম || ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : বীর মুক্তিযোদ্ধা এস. এম. সরোয়ার জাহান ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : মোঃ মনির হোসেন বিশ্বাস || সহ-সম্পাদক : মোঃ শাহাদাত হোসেন
সকালের বাংলাদেশ এর প্রিন্ট ও অনলাইন সংস্করণের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি। সকল স্বত্ব দৈনিক সকালের বাংলাদেশ কর্তৃক সংরক্ষিত।You cannot copy content of this page