সর্বশেষ
সর্বশেষ
সামাজিক সেবায় নিবেদিত সাজ্জাদ হোসেন সিদ্দিকী লাভলু এবার মাদারীপুর-১ আসনে এমপি পদপ্রার্থী কালকিনিতে অবসরপ্রাপ্ত এলজিডি অফিস সহকারীর অস্বাভাবিক মৃত সাভার দক্ষিণ রাজাশন ঘাস মহলে বিএনপির অফিস উদ্বোধন শরীয়তপুর-১ আসনে গণ অধিকার পরিষদের পক্ষে গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ সাভারে এনাম মেডিকেল কলেজে কর্মচারীদের বিক্ষোভ ও কর্মবিরতির ঘোষণা আমতলীতে ইউপির প্রশাসনিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল আমতলীতে কাঁচা সড়ক পাকা করার দাবীতে মানবন্ধন কর্মসূচী পালন বিয়ের প্রলোভনে একাধিকবার ধর্ষণের শিকার, আত্মহত্যার পথ বেঁচে নিলেন কলেজ শিক্ষার্থী আশুলিয়ায় ভূমিদস্যু এম এ মতিন কে গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন তালতলীতে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে অপপ্রচার, শহিদুল হকের প্রতিবাদ

চার বছরে ইলিশের দাম বেড়েছে তিনগুণের বেশি!

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি / ১৭৮ বার শেয়ার হয়েছে
প্রকাশের সময় সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫, ০৪:২৬ অপরাহ্ন
sokalerbd image 7

print news

২০২০ সালে ইলিশের ভরা মৌসুমে এক কেজি ওজনের একটি ইলিশের দাম ছিল ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকার মধ্যে। কিন্তু সেই ইলিশই এখনকার বাজারে ১৭০০ থেকে ১৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

আধাকেজি ওজনের ইলিশ ৩শ টাকা আর ছোট আকারের ইলিশ প্রতি কেজি দুইশ থেকে আড়াইশ টাকা। কিন্তু চার বছরের ব্যবধানে ইলিশের দাম বেড়েছে তিনগুণেরও বেশি। ৩০০ টাকা বা ৪০০ টাকা কেজির কোনো ইলিশ মাছ এখন আর বাজারে পাওয়া যায় না।

ইলিশের দাম বাড়তে শুরু করেছে ২০২১ সালের পর থেকে। কারণ তখন থেকেই মেঘনায় ইলিশের আকাল দেখা দেয়। তবে সে বছর এখনকার দামের চেয়ে কিছুটা কম ছিল। আবার ২০২২ সালের দিকে যখন জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যায়, তখন ইলিশের দাম বেড়ে যায় আরও এক ধাপ। এভাবেই বছর বছর ইলিশের দাম বেড়ে এখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। ফলে এ মাছের স্বাদ নেওয়া এখন দুষ্কর হয়ে পড়েছে।

২০২০ সালে ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছের কেজি বিক্রি হয়েছে ৫০০ টাকার নিচে। ২০২১ সালে ওই মাছের কেজি বিক্রি হয়েছে হাজার টাকার মধ্যে। আবার একই ওজনের ইলিশের কেজি এখন ১৪০০ থেকে ১৫০০ টাকার কম নয়।

৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ পাওয়া যেত ৮০০ টাকার মধ্যে। সেই মাছের বর্তমান বাজার দর ১২০০ টাকার কমে কেনা সম্ভব হচ্ছে না৷ মাঝারি আকারের ইলিশ পাওয়া যেত কেজিপ্রতি ৫০০ টাকা করে।

নিম্নবিত্ত বা নিম্নমধ্যবিত্তদের সাধ্যের মধ্যে ছিল যে ২০০ থেকে আড়াইশ গ্রাম ওজনের জাটকা ইলিশ। সেই জাটকাও এখন সাধারণ ক্রেতাদের সাধ্যের বাইরে চলে গেছে। সর্বনিম্ন ৫০০ টাকার থেকে ৭০০ টাকার কমে এখন আর কোনো জাটকা বিক্রি হয় না। তিন বছর আগেও একই ওজনের জাটকা পাওয়া যেত আড়াইশ থেকে তিনশ টাকার মধ্যে।

চার বছরের ব্যবধানে মাছের মূল্য দেড়গুণ থেকে দ্বিগুণ হওয়ার পেছনে নদীতে মাছের অকাল, জ্বালানি তেলের দাম এবং মাছ শিকারের খরচ বাড়াকে দায়ী করছেন জেলে, আড়তদার, ক্রেতা এবং বিক্রেতারা।

২০২১ সালে বাজার দর অনুযায়ী এক কেজি ওজনের ইলিশ মাছের দাম হাঁকানো হতো ১২শ থেকে ১৩শ’ টাকা। পাঁচশ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি বিক্রি হয়েছে ৬শ থেকে ৭শ টাকার মধ্যে। আর ছোট আকারের ইলিশ ৪শ থেকে ৫শ টাকার মধ্যে বিক্রি হয়েছে।

এক বছর আগে ২০২০ সালে ইলিশের বাজার দরের দিকে তাকালে দেখা যায়, এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৫শ থেকে সাড়ে ৫শ টাকার মধ্যে। আধাকেজি ওজনের ইলিশ ৩শ টাকা আর ছোট আকারের ইলিশ মাছ প্রতি কেজি দুইশ থেকে আড়াইশ টাকায় বিক্রি হতো।

লক্ষ্মীপুরের কমলনগর মতিরহাট এলাকার জেলে কামাল হোসেন, জিলাল ও নুর করিম সকালের বাংলাদেশকে বলেন, মেঘনা নদীতে গত কয়েক বছর ধরে ইলিশ মাছ কমে গেছে। গত চার বছর আগে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পেতাম। কম দামে বিক্রি করেও আমাদের অনেক লাভ হতো। কিন্তু এখন বেশি দামে বিক্রি করেও লাভ হচ্ছে না।

একই এলাকার জেলে মো. জয়নাল মাঝি বলেন, ট্রলারে জ্বালানি তেল ভরে আমাদের সাগরে মাছ শিকারে যেতে হয়। কিন্তু ডিজেলের দাম প্রায় দেড়গুণ বেড়েছে। আনুষঙ্গিক জিনিসপত্রের দামও বেড়েছে। আর নদীতে মাছও নেই। তাই মাছ শিকারের খরচ বাড়ার কারণে বাজারে ইলিশের দামও বেশি।

ট্রলার মাঝি শাহ আলম হাজী বলেন, নদী ও সাগরে প্রচুর ইলিশ পাওয়া যেত। কম দামে মাছ বিক্রি করেও আমাদের লাভ হতো। জেলেদের পোষাতো। কিন্তু এখন লাখ লাখ টাকা ব্যয় করে নদীতে ট্রলার পাঠাই। মাছ ধরে ঘাটে এনে বিক্রি করি। নদীতে গিয়ে যে খরচ হয়, সে খরচও ওঠে না। আমাদের লাভের বদলে লোকসান হয়। ঘাটে বেশি দামে ইলিশ বিক্রি করতে হচ্ছে।

মতিরহাট মাছ ঘাটের আড়তদার মাঈন উদ্দিন বলেন, তিন চার বছর আগে ঘাটে প্রচুর মাছ আসতো। দুই বছর আগেও পাইকারি বাজারে এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হতো ৭০০-৮০০ টাকার মধ্যে। খুচরা বাজারে হাজার টাকার মধ্যে ছিল। সেই ইলিশ এখন ঘাটেই ১৫০০ টাকার ওপরে। বাজারে ১৭০০-১৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

খুচরা মাছ ব্যবসায়ী আলাউদ্দিন বলেন, দুই বছর আগেও জাটকার কদর কম ছিল। ২০০ থেকে আড়াইশ টাকায় বিক্রি হতো জাটকা। এখন ৬০০ টাকার নিচে কোনো জাটকা নেই।

মতির হাট মাছঘাটে ইলিশ মাছ কিনতে আসা ক্রেতা টিপু সুলতান বলেন, বাড়ির জন্য মাছ কিনতে আসছি। কিন্তু যে দাম, কেনার সাধ্য নেই। তিন-চার বছর আগেও মাছের এতো দাম ছিল না। এখন ঘাটে মাছ নেই, তাই দাম কয়েকগুণ বেশি।

তিনি বলেন, ঘাট থেকে জাটকার হালি কিনেছি ৫০০ টাকা করে। ৫০০ গ্রাম ওজনের ১০টি ইলিশ কিনেছি ৬ হাজার টাকা দিয়ে। মাছের যে দাম, ক্রেতাদের সাধ্যের বাহিরে চলে যাচ্ছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর পড়ুন...
নিজ এলাকার খবর দেখুন...

You cannot copy content of this page

You cannot copy content of this page