সর্বশেষ
সর্বশেষ
আমতলীতে স্বাস্থ্য সেবার মান বৃদ্ধিতে এ্যাডভোকেসী সভা মনপুরায় মা ইলিশ ধরা বন্ধে টাস্কফোর্স ও জনসচেতনতা মূলক সভা অনুষ্ঠিত মনপুরার মেঘনায় ইলিশ মাছ শিকারে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা হৃদয়বিদারক ঘটনা মানিকগঞ্জে: মা ও দুই শিশুর মরদেহ উদ্ধার, বিষক্রিয়ার আলামত সাভারে শারদীয় দুর্গাপূজা ২০২৫: আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রশাসনের নিশ্ছিদ্র প্রস্তুতি চরফ্যাশন – মনপুরায় গণসংযোগ ও সভা সমাবেশে ব্যস্ত সময় পার করছেন অ্যাডভোকেট মো সিদ্দিক উল্লাহ মিয়া ডাকসুর ভিপি সাদিক কায়েমের সঙ্গে ফ্যাসিস্ট হাসিনার একশ ছবি আমরা দেখেছি: বিএনপি নেতা খোকন  মনপুরায় জাতীয়তাবাদী তরুন দলের ৩০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে মনপুরায় যুবদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়নের পথ সভা অনুষ্ঠিত শিবচরে রেলওয়ে জমির বৈধ লিজগ্রহীতার বিরুদ্ধে অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

আওয়ামীলীগ সরকারের রোষানলের কারনে প্রতিষ্ঠার ২৪ বছরেও এমপিওভূক্ত হয়নি আমতলীর টিয়াখালী কলেজ,

মাইনুল ইসলাম রাজু , আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি / ১৬৭ বার শেয়ার হয়েছে
প্রকাশের সময় শনিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৪:৫১ অপরাহ্ন
sb 08 2

print news

ভালো ফলাফল করেও শুধু বৈষম্যের কারনে প্রতিষ্ঠার ২৪ বছরেও আমতলীর টিয়াখালী কলেজটি এমপিওভূক্ত না হওয়ায় হতাশ শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারীরা। দীর্ঘদিন ধরে কোন বেতন ভাতা না পেয়ে বর্তমানে কলেজটির ৩০ জন শিক্ষক ও ৮জন কর্মচারী মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

জানা গেছে, আমতলী উপজেলার সদর ইউনিয়নের টিয়াখালী গ্রামের শিক্ষানুরাগী মো. দেলোয়ার হোসেন ২০০০ ইংরেজী সালে প্রায় সোয়া দুই একর জমির উপর টিয়াখালী কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেন। ২০০১ সালে কলেজটি বোর্ডের স্বীকৃতি লাভ করে। স্বীকৃতি লাভের পর কলেজ থেকে প্রতিবছর এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহন করে শিক্ষার্থীরা ভালো ফলাফল করে আসছে। ২০০২ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত ২১ বছরের গড় পাসের হার ৭২। ২০১৯ সালে কলেজ থেকে শত ভাগ পাস করারও রেকর্ড রয়েছে। চলতি বছরও ২০ জন পরীক্ষায় অংশগ্রহন করে ১৫ জন শিক্ষার্থী পাস করেছে। বর্তমানে কলেজটিতে ৩২২ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। বোর্ডের এবং মন্ত্রনালয়ের সকল নিয়ম কানুন সম্পূর্ন বাস্তবায়ন করলেও শুধু রাজনৈতিক বৈষম্যের কারনে কলেজটি এমপিও ভূক্ত করা হয়নি বলে জানা গেছে। কারন কলেজেটির প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ মো. দেলোয়ার হোসেন ছিলেন বিএনপিমনা। তিনি ছিলেন উপজেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক। কলেজটি প্রতিষ্ঠার সময় বিএনপি ক্ষতায় থাকলেও এর যাবতীয় কার্যক্রম গুছিয়ে উঠার মধ্যেই সরকার পরিবর্তন হয়ে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসে। আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষতায় আসার পর চার বার বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভূক্ত করে। কিন্তু রাজনৈতিক রোষানলের কারনে টিয়াখালী কলেজটি আর এমপিওভূক্ত হতে পারেনি দীর্ঘ ২৪ বছরেও। আওয়ামীলীগ সরকার কলেজটি এমপিওভূক্ত না করলেও ২০১৭ সালে একটি চার তলা ভবন করে দিয়েছেন। এটাই এখন শিক্ষক কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের সান্তনা। ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ মো. দেলোয়ার হোসেন অবসরে গেছেন। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন কৃষি শিক্ষা বিষয়ের প্রভাষক কেএম সোহেল নামে একজন।
কলেজটিতে বর্তমানে ৩০জন শিক্ষক ও ৮জন কর্মচারী রয়েছে। তারা দীর্ঘদিন ধরে কোনো ভেতন ভাতা না পেয়ে এখন হতাশ হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
কলেজের একাদশ প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী জান্নাতুল মাওয়া ও বনি আমিন জানান, এখানে লেখাপড়ার মান খুব ভালো। অনেক ছেলে মেয়ে রয়েছে। স্যারেরা অনেক যন্ত সহকারে লেখাপড়া শিখান। কলেজটি এমপিওভূক্ত হলে ছাত্রছাত্রীর সংখা আরো বাড়বে।
কলেজের পিওন মো. শাহানুর ফকির জানান, কলেজে চাকুরী করি কিন্তু কোন বেতন ভাতা পাই না। এহন আর সংসার চালাইতে পারি না। বাহের জমিজমা যা পাইছিলাম আর স্ত্রী স্বর্নলঙ্কার বিক্রি কইর‍্যা সংসার চালাইয়া সব শ্যাষ করছি। হেইয়ার পর ধার কর্জ কইর‍্যা খাইছি। এহন আর কেউ ধারও দ্যায় না। কোন রহম গুরাগারা লইয়া খাইয়া না খাইয়া দিন কাডাইতেছি।

কলেজের দপ্তরী নাসির মৃধা বলেন, এই হানে চাকুরি নিয়া ব্যামালা বিপদে আছি। বয়স থাকতে চাকুরি নিছি এহন আর সরকারী চাকুরির বয়স নাই। কুমে যাইয়া চাকুরি লমু। চাকুরি লইয়া এহন আর কোন কামও করতে পারি না। আরেক দিকে বেতনও পাই না। বলতে বলতে কান্নায় ভেঙ্গে পরেন তিনি। চোখ মুছতে মুছতে বলেন, স্যার দেহেন যাইয়া আমার বাড়ীতে গুরাগারা লইয়া কি অবস্থায় আছি।
কলেজের উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপনন বিভাগের প্রভাষক মো. মোশারেফ হোসেন বলেন, এই কলেজে চাকুরি করে জীবনের মূল্যবান সময় দিয়েছি। কিন্ত এখন শেষ সময়ে এসে শূন্য হাতে বাড়ি ফিরে যেতে হবে এটা জীবনের বড় কষ্ট।
প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ (অব:) মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, এলাকার মানুষের কথা বিবেচনা করে ২০০১ সালে সোয়া দুই একর জমির উপর টিয়াখালী কলেজটি প্রতিষ্ঠা করি। বরগুনা জেলার সকল কলেজের মধ্যে আমার কলেজের শিক্ষার গুনগত মান এবং ভালো ফলাফল থাকা সত্বেও আওয়ামীগ সরকার উদ্দেশ্য মূলক ভাবে এমপিওভূক্ত করেনি। এতে শিক্ষক কর্মচারী এবং এলাকার হাজার হাজার শিক্ষার্থীরা তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। বর্তমানে স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ সরকার পরিবর্তন হয়েছে। আশা করি বর্তমান সরকার টিয়াখালী কলেজটি এমপিওভূক্ত করার উদ্যোগ নেবেন।
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কেএম সোহেল বলেন, সকল কলেজটিতে বর্তমানে ৩০ জন শিক্ষক ৮জন কর্মচারী এবং ৩২২ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। অন্যান্য কলেজের তুলনায় এখানের লেখা পড়ার মান এবং পরিববেশ অত্যান্ত ভালো। কলেজটি এমপিওভূক্ত করা হলে শিক্ষক কর্মচারীরা ডাল ভাত খেয়ে বাঁচার নিশ্চয়তা পাবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর পড়ুন...
নিজ এলাকার খবর দেখুন...

You cannot copy content of this page

You cannot copy content of this page