টানা ২২ দিন পর রোববার গত মধ্যরাত থেকে শেষ হচ্ছে মা ইলিশ শিকারের নিষেধাজ্ঞা। ভোলার মনপুরা উপজেলার জেলেরা মাছ শিকারের জন্য এরইমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। তবে দেনার বোঝা মাথায় নিয়েই এসব জেলেদের নদীতে মাছ শিকারে নামতে হবে। মনপুরা উপজেলার মেঘনা নদীর ছোট-বড় অন্তত ১৫টি মৎস্যঘাট দিয়ে মাছ শিকারের জন্য নদীতে নামার কথা।
মনপুরা উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের সকল মৎস্যঘাট এলাকার জেলে হাসাম উদ্দিন, মো.মিজান, আবুল কালাম এবং মো.নোমান জানান, গত ১৩ অক্টোবর থেকে শুরু করে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত নদীতে সব ধরনের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা ছিল। এই নিষেধাজ্ঞার আগেও আমরা নদীতে তেমন মাছ পাইনি। এরপর আবার নিষেধাজ্ঞা থাকায় আমরা সব জেলেরাই কর্মহীন ছিলাম। যার জন্য ধারদেনা করে সংসার চালাতে হয়েছে। এছাড়া নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে যে চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল তাও ছিল অপ্রতুল। তবে নিষেধাজ্ঞা শেষে নদীতে মাছ শিকারের গিয়ে ভালো মাছ পাওয়ার আশা করছি। কাক্সিক্ষত মাছ পেলেই আমাদের দেনার বোঝা কিছুটা হলেও কমবে।
২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে মনপুরা উপজেলা সামুদ্রিক মৎস্য কর্মকর্তা জানান, এবারের ২২দিনের নিষেধাজ্ঞায় মনপুরা উপজেলার মেঘনা নদীতে ২৫টি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় ৫টি মোবাইল কোর্ট বাস্তবায়ন হয়েছে। এই মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ১লক্ষ ৩৫ হাজার মিটার কারেন্ট জাল ও ৬ টি নৌকা সহ কয়েক জন জেলেকে অবৈধ উপায়ে মাছ শিকারের দায়ে আটক করা হয়েছে। এরমধ্যে ৩ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড- হয়েছে এবং আরো কয়েক জন জেলেক মুচলেখা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এসব জাল আগুনে পুড়িয়ে নষ্ট করা হয়েছে। এছাড়া জব্দকৃত কয়েকটি মাছ ধরা ৫ টি ট্রলার নিলাম চলমান রয়েছে। যার প্রাপ্ত অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়া হবে। সম্মিলিত প্রচেষ্টার কারণে আমরা এই সফলতা অর্জন করতে পেরেছি।
এ বিষয়ে মনপুরা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সৃজন সরকার বলেন, উপজেলা প্রশাসন ও মৎস্য অফিসের যৌথ অভিযানে আমরা বিগত বছরের তুলনায় নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে এবার ব্যাপকভাবে সাফল্য অর্জন করেছি। যার ফলে মা ইলিশ প্রচুর পরিমাণে ডিম ছাড়তে পেরেছে। এতে করে এই উপজেলার জেলেরা তাদের কাঙ্খিত ইলিশ পাবেন বলে আমরা আশা করছি। এছাড়া এই উপজেলার নিবন্ধিত ১১০৫০ জন জেলেকে ২৫ কেজি করে মোট ২৭৬.২৫ মে.ট চাল দেয়া হয়েছে।
You cannot copy content of this page