দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এদিন বেলা ৩টায় শুরু হবে অধিবেশন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এ অধিবেশন আহ্বান করেছেন। নতুন সংসদের প্রথম অধিবেশন হওয়ায় সংবিধান অনুযায়ী ওইদিন সংসদে ভাষণ দেবেন রাষ্ট্রপতি। গতকাল সংসদ সচিবালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ৩০ জানুয়ারি বেলা সাড়ে ৩টায় জাতীয় সংসদ ভবনের সংসদ কক্ষে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম ও ২০২৪ সালের প্রথম অধিবেশন আহ্বান করেছেন। তিনি সংবিধানের ৭২ অনুচ্ছেদের (১) দফায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এ অধিবেশন আহ্বান করেছেন।
একাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন বসে ২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি। সেই হিসেবে ২৯ জানুয়ারি শেষ হচ্ছে ওই সংসদের মেয়াদ। যদিও আইন অনুযায়ী, ৩০ জানুয়ারির আগে সংসদ অধিবেশন বসার সুযোগ ছিল না।
নতুন সংসদের ২৯৮ সদস্য ১০ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছ থেকে দায়িত্ব পালনের শপথ নেন। শপথ নেয়ার ৩০ দিনের মধ্যে অধিবেশন বসার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। পরদিন ১১ জানুয়ারি সন্ধ্যায় সংসদ নেতা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গভবনে শপথ নেন নতুন সরকারের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা।
সংসদের প্রথম অধিবেশনে স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার নির্বাচন করা হবে। আওয়ামী লীগ গতবারের মতো এবারো স্পিকার হিসেবে শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং ডেপুটি স্পিকার পদে শামসুল হক টুকুকে মনোনীত করেছে। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় ভোটে আওয়ামী লীগ মনোনীতরাই বিজয়ী হতে যাচ্ছেন।
৩০ জানুয়ারি স্পিকার-ডেপুটি স্পিকার নির্বাচনের পর অধিবেশন কিছু সময় মুলতবি রাখা হবে। ওই সময় সংসদে অবস্থানরত রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে নতুন স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার শপথ নেবেন। পরে নবনির্বাচিত স্পিকারের সভাপতিত্বে শুরু হবে সংসদের বৈঠক। বৈঠক শুরুর পর নতুন স্পিকার সংসদে শোক প্রস্তাব উত্থাপন করবেন। পরে সেই প্রস্তাবের ওপর আলোচনা হবে।
সংসদের বৈঠক শুরু হলে স্পিকার রাষ্ট্রপতিকে ভাষণ দেয়ার জন্য আহ্বান জানাবেন। রাষ্ট্রপতির ভাষণের পর অধিবেশন রেওয়াজ অনুযায়ী মুলতবি করা হবে। পরে ওই ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নেবেন সংসদ সদস্যরা। বছরের প্রথম অধিবেশন ফেব্রুয়ারিজুড়ে চলার সম্ভাবনা রয়েছে বলে সংসদ সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে।
৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পায় আওয়ামী লীগ। ভোট হওয়া ২৯৯ আসনের মধ্যে ২২২টিতে জয় পায় দলটি। এছাড়া গত দুই সংসদে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ১১টি, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের শরিকদের মধ্যে জাসদ একটি ও ওয়ার্কার্স পার্টি একটি এবং একসময় বিএনপির জোটে থাকা কল্যাণ পার্টি একটি আসনে জয় পায়। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আসন পান স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। যে ৬২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন, তাদের প্রায় সবাই আওয়ামী লীগেরই নেতা।
গোলযোগের কারণে সেদিন ময়মনসিংহ-৩ আসনের একটি কেন্দ্রের ভোট স্থগিত ছিল। গত রোববার সেখানে ভোটের পর এ আসনে নৌকার প্রার্থী জয়ী হন। তাতে আওয়ামী লীগের আসন সংখ্যা বেড়ে ২২৩ হয়েছে।
এছাড়া একজন প্রার্থীর মৃত্যুতে নওগাঁ-২ আসনের ভোট পিছিয়ে দেয়া হয়েছিল। সেখানে ভোট হবে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি।
দলীয়ভাবে সংসদ সদস্যের সংখ্যায় জাতীয় পার্টি এবারো দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। তবে স্বতন্ত্র এমপির সংখ্যা তাদের ছয় গুণ বেশি হওয়ায় প্রধান বিরোধী দল কে হবে, সে আলোচনা চলছে ভোটের পর থেকেই।
You cannot copy content of this page