মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার জামির্ত্তা ইউনিয়ন পরিষদে প্যানেল চেয়ারম্যান নিয়োগকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদের এক সদস্য (মেম্বার) স্থানীয় বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির গুরুতর অভিযোগ তোলার পর থেকে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। এই অভিযোগ পাল্টা অস্বীকার করা হয়েছে, যা নিয়ে স্থানীয় রাজনীতিতে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
অভিযোগের সূত্রপাত:
জামির্ত্তা ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত সদস্য আব্দুল কুদ্দুস সম্প্রতি অভিযোগ করেন যে, প্যানেল চেয়ারম্যান পদে তার নিয়োগ নিশ্চিত করার জন্য স্থানীয় বিএনপি নেতা হাজি শহিদুল ইসলাম এবং তার সহযোগীরা বিভিন্ন সময়ে তার কাছে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করেছেন। আব্দুল কুদ্দুস মেম্বারের আরও দাবি, তিনি অভিযুক্তদের নগদ অর্থ প্রদান করেছেন। তার এই বিস্ফোরক অভিযোগের পর থেকেই বিষয়টি জনসমক্ষে আসে এবং ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়।
চাঁদাবাজির এই অভিযোগ সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছেন অভিযুক্ত বিএনপি নেতা হাজি শহিদুল ইসলাম। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি দাবি করেন, এ ধরনের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট এবং রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তার মতে, তাকে এবং তার দলকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্যই এমন ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে জামির্ত্তা ইউনিয়নের সাধারণ জনগণ ও অন্যান্য জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, ইউনিয়ন পরিষদের অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে এলাকার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা। প্যানেল চেয়ারম্যান নিয়োগের মতো একটি স্বাভাবিক প্রশাসনিক প্রক্রিয়া নিয়ে এমন অভিযোগ ওঠায় তারা হতাশ।
এখন পর্যন্ত সিংগাইর উপজেলা প্রশাসন বা সংশ্লিষ্ট কোনো ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি বা কোনো বিবৃতি দেয়নি। তবে, বিষয়টি প্রশাসনের নজরে রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এলাকার সচেতন মহল আশা করছে, দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে ঘটনার সত্যতা উদঘাটন করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং ইউনিয়ন পরিষদের স্বাভাবিক কার্যক্রম ফিরিয়ে আনা হবে।
স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ঘটনাটি ইউনিয়ন পর্যায়ে রাজনৈতিক ক্ষমতার দ্বন্দ্ব এবং এর অপব্যবহারের একটি দৃষ্টান্ত। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাবে এ ধরনের ঘটনা প্রায়ই ঘটে থাকে, যা তৃণমূল পর্যায়ে গণতন্ত্রকে দুর্বল করে দেয়। তারা দ্রুত একটি নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তির ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
সব মিলিয়ে, জামির্ত্তা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান নিয়োগ সংক্রান্ত এই জটিলতা এবং চাঁদাবাজির অভিযোগ স্থানীয় রাজনীতিতে একটি অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগের এই খেলার শেষ কোথায়, এবং ইউনিয়নের সেবা কার্যক্রম এর ফলে কতটা প্রভাবিত হবে, তা সময়ই বলে দেবে।
মাজহারুল ইসলাম সম্পাদিত এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা এস. এম. সরোয়ার জাহান-এর তত্ত্বাবধানে, বেপারী অ্যান্ড ব্রাদার্স লিমিটেড-এর প্রকাশনায়, ৭০, কমলাপুর, মতিঝিল, ঢাকা থেকে প্রকাশিত।
দৈনিক সকালের বাংলাদেশ-এর প্রিন্ট ও অনলাইন সংস্করণের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি। সকল স্বত্ব দৈনিক সকালের বাংলাদেশ কর্তৃক সংরক্ষিত।You cannot copy content of this page