সর্বশেষ
সর্বশেষ
আমতলীতে স্বাস্থ্য সেবার মান বৃদ্ধিতে এ্যাডভোকেসী সভা মনপুরায় মা ইলিশ ধরা বন্ধে টাস্কফোর্স ও জনসচেতনতা মূলক সভা অনুষ্ঠিত মনপুরার মেঘনায় ইলিশ মাছ শিকারে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা হৃদয়বিদারক ঘটনা মানিকগঞ্জে: মা ও দুই শিশুর মরদেহ উদ্ধার, বিষক্রিয়ার আলামত সাভারে শারদীয় দুর্গাপূজা ২০২৫: আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রশাসনের নিশ্ছিদ্র প্রস্তুতি চরফ্যাশন – মনপুরায় গণসংযোগ ও সভা সমাবেশে ব্যস্ত সময় পার করছেন অ্যাডভোকেট মো সিদ্দিক উল্লাহ মিয়া ডাকসুর ভিপি সাদিক কায়েমের সঙ্গে ফ্যাসিস্ট হাসিনার একশ ছবি আমরা দেখেছি: বিএনপি নেতা খোকন  মনপুরায় জাতীয়তাবাদী তরুন দলের ৩০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে মনপুরায় যুবদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়নের পথ সভা অনুষ্ঠিত শিবচরে রেলওয়ে জমির বৈধ লিজগ্রহীতার বিরুদ্ধে অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

জাবিতে স্বামীকে আটকে নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার

সকালের বাংলাদেশ অনলাইন ডেক্স / ৭৪ বার শেয়ার হয়েছে
প্রকাশের সময় শনিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১:১৬ অপরাহ্ন
00

print news

 

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসিক হলে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর শাখা ছাত্রলীগের এক নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাকে পালাতে সহযোগিতা করায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে আরও তিনজনকে।

শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হল সংলগ্ন জঙ্গলে এ ধর্ষণের ঘটনার পর প্রধান আসামি মোস্তাফিজুর রহমানকে রোববার ভোরে সাভার থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্ ও ট্র্যাফিক, উত্তর বিভাগ) আব্দুল্লাহিল কাফি।

মোস্তাফিজুর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০১৫-১৬ বর্ষের শিক্ষার্থী ও জাবি শাখা ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক। তিনি থাকেন মীর মশাররফ হোসেন হলে।

মোস্তাফিজুর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেলের অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত। ধর্ষণের ঘটনায় তাকে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ।

মামুন নামের আরেকজনও ধর্ষণের অভিযোগের মুখে রয়েছেন। ‘বহিরাগত’ এ যুবক ভুক্তভোগী নারীর বাসায় ভাড়া থাকতেন। মীর মশাররফ হোসেন হলের এ ব্লকের ৩১৭ নম্বর কক্ষে মোস্তাফিজুরের কাছে তার যাতায়াত ছিল।

৩১৭ নম্বর কক্ষটিতে মোস্তাফিজুর ছাড়াও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক মুরাদ হোসেন থাকেন।

ধর্ষণের ঘটনা জানাজানির পর মীর মশাররফ হোসেন হলের ফটকে প্রশাসনের লাগানো তালা ভেঙে জড়িতদের পালিয়ে যেতে সাহায্য করার অভিযোগ উঠেছে ওই হলের ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে।

ঘটনার বর্ণণায় ভুক্তভোগী নারী জানান, তাদের বাড়ি আশুলিয়ার জিরানী এলাকায়। শনিবার সন্ধ্যায় তার স্বামীকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘুরতে নিয়ে যান মামুন। ঘোরাঘুরির এক পর্যায়ে তার স্বামী কিছু আসবাবপত্র কিনতে হবে বলে মামুনকে জানান।

তখন মামুন তার স্বামীকে বলেন যে, একটি আসবাবপত্রের দোকানে তার কিছু টাকা পাওনা রয়েছে; কিন্তু দোকানদার টাকা ফেরত দিচ্ছে না। তাই ওই দোকান থেকে কেনাকাটা করলে পাওনা টাকাটা ব্যালেন্স হয়ে যাবে।

ভুক্তভোগী বলেন, তারও আসবাবের দোকানে যাওয়ার কথা ছিল। সেই অনুযায়ী স্বামী তাকে ফোন করে বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে বলেন এবং আসার সয়ম সঙ্গে করে মামুনের কিছু জামাকাপড়ও নিতে বলেন। কারণ মামুনের কয়েকদিন ক্যাম্পাসে মোস্তাফিজুরের সঙ্গে থাকার কথা ছিল।

এরপর মোস্তাফিজুর ও মামুন মিলে ওই নারীর স্বামীকে মীর মশাররফ হোসেন হলে আটকে রাখেন। পরে ওই নারী মামুনের জামা-কাপড় নিয়ে ক্যাম্পাসে গেলে তার কাছ থেকে সেগুলো নিয়ে হলের কক্ষে রেখে আসে মামুন।

ওই নারীর অভিযোগ, মামুন ফিরে এসে তাকে জানান যে, তার স্বামী হলের অন্য ফটক (জঙ্গলের দিক) দিয়ে আসবেন। সেই মোতাবেক সেই পথে গেলে মোস্তাফিজুর ও মামুন তাকে হল সংলগ্ন জঙ্গলে নিয়ে ধর্ষণ করেন।

এদিকে ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর মীর মশাররফ হোসেন হলের সামনে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী অবস্থান করে বিক্ষোভ করেন। এ সময় তারা ‘ক্যাম্পাসে ধর্ষক কেন, প্রশাসন জবাব চাই’; ‘ধর্ষণমুক্ত ক্যাম্পাস চাই’; ‘ধর্ষকদের পাহারাদার, হুঁশিয়ার সাবধান’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন। এর মধ্যে জড়িতদের খুঁজতে কর্তৃপক্ষ ওই হল থেকে বের হওয়ার চারটি ফটক বন্ধ করে দেন।

পরে সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, কর্তৃপক্ষের লাগানো তালা ভেঙে জড়িতদের পালিয়ে যেতে পালিয়ে যেতে সহায়তা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কর্মী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী সাগর সিদ্দীকি।

তার সঙ্গে ছিলেন শাখা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সাব্বির ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী হাসান।

তবে ধর্ষণের কথা হাসান জানতেন না দাবি করে সাংবাদিকদের বলেন, “ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি শাহ পরাণ ভাইয়ের নির্দেশে আমি তালা ভাঙতে যাই। গিয়ে দেখি সাগর সিদ্দীকি ও সাব্বির সেখানে আছে। পরে আমরা তিনজন মিলে তালা ভাঙ্গি।”

এই তিনজনও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান সোহেলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। মীর মশাররফ হোসেন হলের নিরাপত্তারক্ষী দুলাল মিয়াও তাদের তালা ভাঙতে দেখেছেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক সাব্বির আলম বলেন, “ঘটনাটা শুনেছি। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে জড়িতদের শনাক্তের চেষ্টা করা হচ্ছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

মোস্তাফিজুরের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল বলেন, ধর্ষণে জড়িত থাকার অভিযোগে তাকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।

এদিকে অভিযোগের বিষয়ে জানতে মোস্তাফিজুরের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। পরে আবারও চেষ্টা করা হলে মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, “ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক, আমরা রাষ্ট্রীয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করব।”

এ ঘটনার পর রোববার বেলা ১২টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে আসেন পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহিল কাফি। তিনি বলেন, প্রধান আসামি মোস্তাফিজুরকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের সহযোগিতায় সাব্বির হাসান সাগর, সাগর সিদ্দীকি এবং হাসানুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, “আমরা সকলকে আশ্বস্ত করতে চাই, অপরাধী যে-ই হোক না কেনো তার পার পেয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আমরা কাজ শুরু করি এবং ছয়জন আসামির মধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করি। বাকী দুজনকে গ্রেপ্তারে আমাদের অভিযান চলছে।”

গ্রেপ্তররা অভিযোগ স্বীকার করেছে কী-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আপাতত এতটুকু আপনাদের জানানো হলো। বাকী তদন্তের পরে আবার জানানো হবে।”


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর পড়ুন...
নিজ এলাকার খবর দেখুন...

You cannot copy content of this page

You cannot copy content of this page