ফিলিস্থিনে ইসরায়েলি নৃশংস গনহত্যা ও বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে শরীয়তপুরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবির শরীয়তপুর জেলা শাখা। আজ শুক্রবার বাদ জুমা জেলা মডেল মসজিদ থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে চৌরঙ্গি মোরে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে একটি বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় । এই বিক্ষোভ মিছিলে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শরীয়তপুর জেলা শাখার শিক্ষার্থী ও অন্যান্য ইসলামী সংগঠনের নেতাকর্মীরা যোগদান করেন।
মিছিলে উপস্থিত জনতা, নেতানিয়াহুর দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে’, ‘ফ্রি ফ্রি প্যালেস্টাইন-স্টপ জেনোসাইড’, ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক-ফিলিস্তিন মুক্তি পাক’, ’উই ওয়ান্ট জাস্টিস, ফিলিস্তিনে হামলা কেন, জাতিসংঘ জবাব চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
মিছিল শেষে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, ইসরায়েল যদি এই বর্বরোচিত হামলা বন্ধ না করে তাহলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতেও প্রস্তুত আছি।
বিক্ষোভ মিছিল ইসলামি ছাত্র শিবির ছাড়াও, বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন রাজনৈতিক, অরাজনৈতিক সংগঠন অংশগ্রহণ করে।
বিক্ষোভ সমাবেশের শরীয়তপুর জেলা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, সারা বিশ্বে ন্যায় বিচার কায়েমকারী সর্বশেষ খেলাফত ছিল ওসমানী খেলাফত, সেই ওসমানী খেলাফত কে ইহুদিদের জনক, ষড়যন্ত্র করে মুসলমানদের ঐক্যকে টুকরো টুকরো করে মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করেছিল। সেই বিভেদের কারণে আজকে আমরা মুসলমানরা ও মুসলিম দেশগুলো ঐক্য গড়তে পারছি না। আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ হতে না পারি আজকে ইহুদীরা যেভাবে নির্মমভাবে আমাদের ফিলিস্তিনি ভাইদেরকে হত্যা করছে, ঠিক তেমনিভাবে হয়তো আমাদের উপর, আমাদের দেশের মানুষের উপরও তারা অত্যাচার করতে পারে। সেদিন আর বেশি দূরে নয়।
আপনাদের কাছে অনুরোধ থাকবে, আমরা যেই তলোয়ার ছেড়ে দিয়েছি, প্রয়োজনে সেই তলোয়ার পুনরায় হাতে তুলে নিব। আমরা যে জিহাদের মর্মার্থ ও রাসূল্লাহ (স:) এর কাছ থেকে শিখেছি, আমরা সেই মর্মার্থ দিয়ে প্রয়োজনে রাজপথে আবার লড়াই করব। এজন্য প্রয়োজন আমরা ছাত্রশিবির সবসময় প্রস্তুত থাকবো। আর ইসরায়েল যদি এই বর্বরোচিত হামলা বন্ধ না করে তাহলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতেও প্রস্তুত আছি।
এ সময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন শরীয়তপুর জেলা শাখার আহ্বায়ক ইমরান আল নাজির বলেন, আজ আমাদের ফিলিস্তিনি ভাইদের উপর ইসরাইলের খুনিরা যেভাবে বোমা নিক্ষেপ করছে, গাজায় তারা যে নারকীয় তাণ্ডব চালাচ্ছে, সেই নারকীয় তাণ্ডবের প্রতিবাদে আজ আমরা রাস্তায় দাঁড়িয়েছি। আমরা যুদ্ধের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে চাই, রক্তের বিরুদ্ধে রক্ত শোষণ করতে চা। আমরা চাই পৃথিবীর ২০০ কোটি মুসলিম ঐক্যবদ্ধভাবে আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ঐক্য গড়ে তুলবে। তাহলে পৃথিবী ভালো থাকবে, পৃথিবীর সব মানুষ ভালো থাকবে, পৃথিবীর মুসলিমরা ভালো থাকবে।
এই সময় সমাবেশে শরীয়তপুর জেলা জামাত ইসলামী সহ-সাধারণ সম্পাদক মোঃ শহিদুল ইসলাম বলেন, খুব শীঘ্রই জাতিসংঘ কে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে ইসরাইলকে নিষিদ্ধের। তাদেরকে ফিলিস্তিনিদের থেকে দূর করতে হবে, ফিলিস্তিনিদের মুক্ত করে দেয়া হয়েছিল কিন্তু দোসর ইসরাইল ফিলিস্তিনিদের বন্দি করে রাখতে চায়। আজ মুসলমানরা ধৈর্যশীল বলে ইসরাইল তাদের এই সুযোগ নিয়েছে।
কিন্তু মুসলিম বিশ্বকে এখন এগিয়ে আসতে হবে। মুসলিম বিশ্ব যদি ঐক্যবদ্ধ থাকে। তাহলে জাতিসংঘ, মুসলিমদের কথা রাখতে বাধ্য হবে, ইসরাইলি আগ্রাসনের বিরোধিতা করবে। ফিলিস্তিনিদের নিশ্চিহ্ন করতে চায় বলেই আজ তারা নির্বিচারে শিশুদেরকে হত্যা করছে। শিশুদের হাহাকার ক্ষুধার চিৎকার দেখলে আর সহ্য হয় না মুসলিম অমুসলিম কারোরই সহ্য হওয়ার কথা না। এসব দেখে আজকে আমাদের হৃদয়ের রক্তক্ষরণ হচ্ছে। জাতিসংঘ এবং মুসলিম বিশ্ব নেতাদের কাছে অনুরোধ করি আজকে যারা অবুঝ শিশুদের রক্ত ঝরাচ্ছে তাদের নির্বিচারে হত্যা করছে, সেই হাত থেকে যেন ফিলিস্তিনিদের মুক্ত করা হয়। ফিলিস্তিনিদের মুক্ত করতে বিশ্ব মুসলিম নেতারা যে সিদ্ধান্ত নিবেন আমরা সেই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে প্রস্তুত রয়েছি।
ছবি : দৈনিক সকালের বাংলাদেশ
You cannot copy content of this page