দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা ও চাঁদাবাজির ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলেছে। দোকানপাট লুট, প্রাণনাশের হুমকি, গুলি করে হত্যা ও অপহরণের মতো ভয়াবহ ঘটনা এখন নিয়মিত। এসব কারণে দক্ষিণ আফ্রিকায় অবস্থানরত হাজার হাজার প্রবাসী বাংলাদেশি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
গত মাসে কেপটাউনের কাছাকাছি একটি শহরে মো. রাসেল নামে এক বাংলাদেশি দোকান মালিককে দুর্বৃত্তরা গুলি করে হত্যা করে। স্থানীয় পুলিশ এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। রাসেলের পরিবারের দাবি, তিনি দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় গ্যাংয়ের কাছ থেকে চাঁদার হুমকি পাচ্ছিলেন। সময়মতো টাকা না দেওয়ায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।
অনেক প্রবাসী বলছেন, স্থানীয় কিছু সন্ত্রাসী চক্র প্রবাসীদের টার্গেট করে নিয়মিত চাঁদা দাবি করে। ব্যবসা করতে হলে তাদের ‘পারমিশন মানি’ দিতে হয়। না দিলেই শুরু হয় ভাঙচুর, আগুন বা হামলা। বিশেষ করে যারা একা একা দোকান চালান বা ছোটখাটো ব্যবসা করেন, তারাই সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকেন।
এক প্রবাসী বাংলাদেশি জানান, “রাতের পর রাত আমরা ঘুমাতে পারি না। কখন কার দোকানে আগুন লাগে, কে অপহৃত হয় — বলা মুশকিল। অথচ পুলিশ অনেক সময় অভিযোগ নিতেই চায় না।”
দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রায় ৫০ হাজারের বেশি বাংলাদেশি বসবাস করছেন। তাদের মধ্যে অনেকে দীর্ঘদিনের প্রবাসী হলেও এখন পরিবারকে দেশে পাঠিয়ে দিয়েছেন এবং নিজেরাও দেশে ফেরার চিন্তায় আছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্থানীয় প্রশাসনের দুর্বলতা ও দুর্নীতির কারণে এই সন্ত্রাসীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে। তারা প্রবাসীদের টার্গেট করছে, কারণ জানে – এরা বিদেশি, ভয় পায়, অভিযোগ করতে চায় না।
বাংলাদেশ দূতাবাস জানিয়েছে, তারা দক্ষিণ আফ্রিকার সরকারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন এবং প্রবাসীদের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তুলেছেন।
তবে প্রবাসীদের দাবি, কূটনৈতিক পর্যায়ে আরও জোরালো ভূমিকা নেওয়া প্রয়োজন। কারণ দিন দিন পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে।
You cannot copy content of this page